
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক রীতিতে সংখ্যা গণনা
দেশীয় রীতিতে সংখ্যা গণনা
♦ দেশীয় রীতিতে সংখ্যার ডানদিক থেকে ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ, ৫ম, ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম স্থানকে যথাক্রমে একক, দশক, শতক, হাজার, অযুত, লক্ষ, নিযুত ও কোটি বলা হয়।
♦ এককের ঘরের অঙ্কগুলোকে পড়া হয় এক, দুই, তিন ইত্যাদি। যেমন, এককের ঘরে ৮ থাকলে পড়তে হয় আট।
♦ দশকের ঘরের অঙ্কগুলোকে আলাদাভাবে না পড়ে দশক ও একক-এই দুই ঘরের অঙ্ক দ্বারা গঠিত সংখ্যা পড়তে হয়। যেমন, দশকের ঘরে ৩ এবং এককের ঘরে ৮ থাকলে পড়তে হয় ৩৮ অর্থাৎ আটত্রিশ।
♦ শতকের ঘরের অঙ্কগুলোকে পড়া হয় একশ, দুইশ, তিনশ ইত্যাদি। যেমন, শতকের ঘরে ৬ থাকলে পড়তে হয় ছয়শ।
♦ হাজারের ঘরের অঙ্কগুলোকে পড়া হয় এক হাজার, দুই হাজার, তিন হাজার ইত্যাদি। যেমন, হাজারের ঘরে ১ থাকলে পড়তে হয় এক হাজার।
♦ অযুতের ঘরের অঙ্কগুলোকে আলাদাভাবে না পড়ে অযুত ও হাজার-এই দুই ঘরের অঙ্ক দ্বারা গঠিত সংখ্যা যত তত হাজার পড়তে হয়। যেমন, অযুতের ঘরে ২ এবং হাজারের ঘরে ১ থাকলে পড়তে হয় একুশ হাজার।
♦ লক্ষের ঘরের অঙ্কগুলোকে পড়া হয় এক লক্ষ, দুই লক্ষ, তিন লক্ষ ইত্যাদি। যেমন, লক্ষের ঘরে ২ থাকলে পড়তে হয় দুই লক্ষ।
♦ নিযুতের ঘরের অঙ্কগুলোকে আলাদাভাবে না পড়ে নিযুত ও লক্ষ-এই দুই ঘরের অঙ্ক দ্বারা গঠিত সংখ্যা যত তত লক্ষ পড়তে হয়। যেমন, নিযুতের ঘরে ৩ এবং লক্ষের ঘরে ২ থাকলে পড়তে হয় বত্রিশ লক্ষ।
♦ কোটির ঘরের অঙ্কগুলোকে পড়া হয় এক কোটি, দুই কোটি, তিন কোটি ইত্যাদি। যেমন, কোটির ঘরে ৫ থাকলে পড়তে পাঁচ কোটি।
♦ আবার কোটির ঘরের বামদিকে আরো অঙ্ক থাকলে সেগুলো এবং কোটির ঘরের অঙ্ক দ্বারা গঠিত সংখ্যা যত হয় তত কোটি পড়তে হয়। যেমন কোটির ঘরের বামে ১এবং কোটির ঘরে ৫ থাকলে পড়তে হয় পনর কোটি।
দেশীয় রীতিতে সংখ্যায় ‘কমা’ ব্যবহার
দেশীয় রীতিতে চার বা ততোধিক অঙ্ক দ্বারা গঠিত সংখ্যা সহজে ও শুদ্ধভাবে পড়ার জন্য কমা ব্যবহার করা যায়। এর জন্য, যেকোনো সংখ্যার ডানদিক থেকে তিন ঘর পর একটি কমা (,) এবং এরপর দুই ঘর পর পর কমা (,) ব্যবহার করতে হয়।
যেমন, ১৫৩২২১৬৩৮ সংখ্যাটিকে কমা (,) ব্যবহার করে লিখলে সংখ্যাটি হবে ১৫,৩২,২১,৬৩৮। কমা (,) ব্যবহারের কারনে সংখ্যাটিকে সহজেই পড়া যায়-‘পনর কোটি বত্রিশ লক্ষ একুশ হাজার ছয়শ আটত্রিশ’।
আন্তর্জাতিক রীতিতে সংখ্যা গণনা
♦ আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে সংখ্যা লেখার ক্ষেত্রে একক, দশক ও শতক এর ঘরের অঙ্কগুলো আমাদের দেশীয় রীতির অনুরূপ।
♦ কিন্তু শতকের ঘরের বামে অনুর্ধ্ব তিনটি ঘর হাজারের জন্য ব্যবহার করা হয়। যেমন, শতকের ঘরের বামে তিনটি ঘর ব্যবহার করে ৬৭২ লেখা হলে পড়তে হবে ছয়শ বাহাত্তর হাজার।
♦ হাজারের তিনটি ঘরের বামে অনুর্ধ্ব তিনটি ঘর ব্যবহার করা হয় মিলিয়নের জন্য। যেমন, হাজারের ঘরের বামে তিনটি ঘর ব্যবহার করে ৩৫৪ লেখা হলে পড়তে হবে তিনশ চুয়ান্ন মিলিয়ন।
♦ মিলিয়নের তিনটি ঘরের বামে বিলিয়নের ঘর। যেমন, মিলিয়নের ঘরের বামে দুইটি ঘর ব্যবহার করে ৪৭ লেখা হলে পড়তে হবে সাতচল্লিশ বিলিয়ন।
আন্তর্জাতিক রীতিতে সংখ্যায় ‘কমা’ ব্যবহার
সংখ্যাকে সহজে পড়ার জন্য আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে সংখ্যা লেখার ক্ষেত্রে ডানদিক থেকে তিনঘর পরপর কমা ( , ) ব্যবহার করা হয়। যেমন, ৪৭৩৫৪৬৭২৫৮২ সংখ্যাটিকে কমা (,) ব্যবহার করে লিখলে সংখ্যাটি হবে ৪৭,৩৫৪, ৬৭২,৫৮২ এবং পড়তে হবে ‘সাতচল্লিশ বিলিয়ন তিনশ চুয়ান্ন মিলিয়ন ছয়শ বাহাত্তর হাজার পাঁচশ বিরাশি’।
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণনা রীতির পারস্পরিক সম্পর্ক
♦ দেশীয় রীতিতে যেটি নিযুতের ঘর আন্তর্জাতিক রীতিতে তা মিলিয়নের জন্য নির্ধারিত তিনটি ঘরের সর্বডানের ঘর। নিযুতের ঘরে ১ লিখলে দেশীয় রীতিতে তার মান হয় ১ নিযুত বা দশ লক্ষ। আন্তর্জাতিক রীতিতে তা হয় এক মিলিয়ন।
♦ বিলিয়নের ঘরের সর্বডানের ঘরে ১ লিখলে দেশীয় রীতিতে তার মান হয় একশ কোটি। আন্তর্জাতিক রীতিতে তা হয় ১ বিলিয়ন।
অর্থাৎ
১ মিলিয়ন = ১০ লক্ষ
১ বিলিয়ন = ১০০ কোটি
জাযাকাল্লাহু খাইরান।
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ
কোটির দশকের কোন নাম নাই?
কোটির দশকের ঘরকে দশক কোটি বলা যায়।
খুবই উপকৃত হইলান
জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ কমেন্ট করার জন্য।
একশ কোটি অংকে কমা বসিয়ে কিভাবে লিখবো?
একশ কোটি = ১০০,০০,০০,০০০ (প্রথমে তিনঘর বামে, তারপর দুইঘর বামে, তারপর আবার দুইঘর বামে কমা বসাতে হবে। এটি দেশীয় রীতিতে কমানো বসানোর পদ্ধতি)। মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আন্তর্জাতিক সংখ্যা পঠণ পদ্ধতি বলতে কি বুঝ?
আন্তর্জাতিক সংখ্যা পঠনে ডান থেকে বামদিকের ঘরগুলোকে পড়তে হয় একক, দশক, শতক, হাজার (তিন ঘর), মিলিয়ন (তিন ঘর), বিলিয়ন (ঘরসংখ্যা অনির্দিষ্ট)।
47 বিলিয়ন হবে না ৭৪ বিলিয়ন হবে।
♦ মিলিয়নের তিনটি ঘরের বামে বিলিয়নের ঘর। যেমন, মিলিয়নের ঘরের বামে দুইটি ঘর ব্যবহার করে ৪৭ লেখা হলে পড়তে হবে সাতচল্লিশ বিলিয়ন।
সম্ভবত আপনি এই পোস্টের এই বিষয়টির উপর প্রশ্ন করেছেন। এখানে বলা হয়েছে বিলিয়নের ঘরে ৪৭ লিখলে অর্থাৎ মিলিয়নের তিনটি ঘর বাদ দিয়ে তার বামে বিলিয়নের ঘরে ৪৭ লিখলে (অর্থাৎ বিলিয়নের এককের ঘরে ৭ আর দশকের ঘরে ৪ লিখলে) পড়তে হবে সাতচল্লিশ বিলিয়ন। আর যদি আপনি ৭৪ লিখেন তাহলে পড়তে হবে চুহাত্তর বিলিয়ন। কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।