• No products in the cart.

সংখ্যা ও সংখ্যা পদ্ধতি

সংখ্যা ও সংখ্যা পদ্ধতি (Number and Number System)

সংখ্যা (Number)

সংখ্যা হচ্ছে এমন গাণিতিক উপাদান যা কোনো কিছু গণনা বা পরিমাপ করার কাজে ব্যবহৃত হয়। সংখ্যা প্রকাশের জন্য প্রয়োজন একটি সংখ্যা পদ্ধতি। সংখ্যা পদ্ধতিতে কতগুলো চিহ্ন বা প্রতীক থাকে যা দিয়ে সংখ্যাকে প্রকাশ করা হয়। সবচেয়ে পরিচিত সংখ্যা পদ্ধতি হলো দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি। এই সংখ্যা পদ্ধতিতে 10টি চিহ্ন বা প্রতীক রয়েছে 0, 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9। এই প্রতীকগুলোকে বলা হয় অঙ্ক (Digit)। 1-9 অঙ্কগুলো স্বার্থক অঙ্ক (Significant Number) এবং 0 হলো সাহায্যকারী। এর নিজস্ব কোনো মান নেই। এসব অঙ্ক ব্যবহার করে আমরা যেকোনো সংখ্যা  লিখতে পারি।

সংখ্যার ব্যবহার (Use of Numbers)

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সংখ্যার ব্যবহার সর্বত্র। সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘড়িতে সময় দেখা দিয়ে শুরু সংখ্যার ব্যবহার। তারপর সারাদিনই সংখ্যা আর সংখ্যা। খেতে বসে ডিম, রুটি, চা গুনে গুনে খাওয়া। দুরের কারো সাথে কথা বলার জন্য মোবাইলে সংখ্যা চেপে সংযোগ স্থাপন, স্বাস্থের অবস্থা বুঝতে হার্টবিট ও প্রেশার দেখা, বাজারে আলু পটল ক্রয় করার সময় পরিমান বুঝে নিয়ে গুনে গুনে টাকা দেয়া, আবহাওয়ার অবস্থা বুঝতে টেমপারেচার দেখা, ক্যালেন্ডারের তারিখ, শেয়ার বাজারের দরপতন ও দরবৃদ্ধি, পরিচয় যাচাইয়ে আইডি পাসওয়ার্ড, খেলাধুলায় গোল ও রান, ঠিকানায় বাসা নম্বর ও রোড নম্বর  ইত্যাদি ইত্যাদি কত কিছু। সবকিছুতেই সংখ্যা। সংখ্যার মধ্যে দিনরাত হাবুডুবু আরকি।

সংখ্যার প্রকারভেদ (Kinds of Numbers)

সংখ্যার প্রধান প্রধান প্রকারগুলো হলো

  • স্বাভাবিক সংখ্যা (Natural Numbers): সচরাচর গণনার কাজে ব্যবহৃত সংখ্যাসমূহ।
  • পূর্ণসংখ্যা (Integers): অখন্ড সংখ্যা (ভগ্নাংশ নয়) যা ধনাত্মক, ঋণাত্মক বা 0 হতে পারে।
  • মূলদ সংখ্যা (Rational Numbers): যে সংখ্যাকে ভগ্নাংশ আকারে প্রকাশ করা যায়।
  • অমূলদ সংখ্যা (Irrational Numbers): যে সংখ্যাকে ভগ্নাংশ আকারে প্রকাশ করা যায় না।
  • বাস্তব সংখ্যা (Real Numbers): সকল মূলদ সংখ্যা ও অমূলদ সংখ্যা নিয়ে বাস্তব সংখ্যা।
  • অবাস্তব সংখ্যা (Imaginary Numbers): কোনো সংখ্যাকে বর্গ করা হলে যদি ঋণাত্মক সংখ্যা পাওয়া যায় তখন তাকে অবাস্তব সংখ্যা বা কাল্পনিক সংখ্যা বলা হয়। অন্যভাবে বলা যায় কোনো ঋণাত্মক সংখ্যার বর্গমূল হলো অবাস্তব সংখ্যা।
  • জটিল সংখ্যা (Complex Numbers): a+bi হলো জটিল সংখ্যা, যেখানে a ও b হলো বাস্তব সংখ্যা এবং i হলো -1 এর বর্গমূল।

সংখ্যা পদ্ধতি (Number System)

নির্দিষ্ট নিয়মে প্রতীক বা চিহ্ন ব্যবহার করে সংখ্যা প্রকাশের পদ্ধতিকে সংখ্যা পদ্ধতি বলে। মানুষ তার বহুমুখী প্রয়োজনে বিভিন্ন ধরনের সংখ্যা পদ্ধতি গঠন করেছে। প্রতিটি সংখ্যা পদ্ধতির রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু প্রতীক (Symbol) বা চিহ্ন যার মাধ্যমে যেকোনো সংখ্যা প্রকাশ করা যায়। 

প্রাচীনকালের মানুষদের সংখ্যা পদ্ধতি (Number System of Ancient People)

প্রায় 40,000 বছর আগে আঙ্গুল ব্যবহার করে ও দাগ কেটে বা ট্যালি চিহ্নের (Tally Marks) সাহায্যে গণনা পদ্ধতির সূত্রপাত ঘটে যা মানুষকে পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রতীকের সাহায্যে সংখ্যা লেখার পদ্ধতির দিকে ধাবিত করে। এক্ষেত্রে প্রাচীন মিশরীয়দের হায়ারোগ্লিফিকস (Hieroglyphics) সংখ্যা পদ্ধতির কথা বলা যেতে পারে। প্রায় 5,000 কী 6,000 বছর আগে মেসোপটেমিয়ায় (বর্তমান ইরাক) সংখ্যা লেখার জন্য নির্দিষ্ট চিহ্ন বা প্রতীকের ব্যবহার শুরু হয়।

প্রাচীন সংখ্যা পদ্ধতিগুলোর মধ্যে ইনকা (Incas), মায়ান (Mayan), রোমান (Roman) ও গ্রীক (Greek) সংখ্যা পদ্ধতির কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

উল্লেখযোগ্য চারটি সংখ্যা পদ্ধতি

বর্তমানে যেসকল সংখ্যা পদ্ধতি বিভিন্ন ধরনের কাজে ব্যবহার হচ্ছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য চারটি সংখ্যা পদ্ধতি হলো

  • বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি (Binary Number System) : বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির প্রতীক দুইটি। যথা 0 ও 1। এটি দুই ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি। 
  • অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি (Octal Number System): অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতির প্রতীক আটটি। যথা 0, 1, 2, 3, 4, 5, 6 ও 7। এটি আট ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি।
  • ডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি (Decimal Number System): ডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতির প্রতীক দশটি। যথা 0, 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8 ও 9। এটি দশ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি। 
  • হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি (Hexadecimal Number System): হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতির প্রতীক ষোলটি। যথা 0, 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9, A, B, C, D, E ও F। এটি ষোল ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি। 

সংখ্যা পদ্ধতির ব্যবহার (Use of Number Systems)

কম্পিউটার যাবতীয় সংখ্যা, শব্দ, অডিও, ভিডিও, গ্রাফিক্স ইত্যাদির ডাটা সংরক্ষনে ও ম্যানিপুলেশনে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করে। লজিক গেট ব্যবহার করে ইলেক্ট্রনিক সার্কিটে সরাসরি প্রয়োগ করা যায় বিধায় বর্তমানে কম্পিউটার ও কম্পিউটার ভিত্তিক ডিভাইগুলোতে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির দুইটি বিট 0 ও 1 কে যথাক্রমে অফ ও অন এর সাথে খুব সহজেই সম্পর্কিত করা যায়। বড় বড় বাইনারি সংখ্যাকে ইন্টারপ্রেট করার জন্য অক্টাল ও হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার হয়। এছাড়া ডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতির কথা আর কী বলবো। এটি ছাড়া আমাদের চলেই না।

August 18, 2023

0 responses on "সংখ্যা ও সংখ্যা পদ্ধতি"

Leave a Message

Your email address will not be published. Required fields are marked *

top
2024 | MATHBD